ধর্ষণ এবং প্রতিকার
এইচ এম রুহুল আমিন মোল্লা
বাংলাদেশে ধর্ষণ একটি সামাজিক ব্যাধি! যা বর্তমানে
মহামারী আকার ধারণ করেছে , এমন অবস্থায় আমাদের সকলের এর বিরোধে সচেতন হওয়া জরুরি।
কি কি উপায়ে ধর্ষণ হতে পারেঃ
-দন্ড বিধি ১৮৬০ এর ৩৭৫ ধারা অনুযায়ী ৫ প্রকার এর যে কোন
অবস্থায় নারীর সঙ্গে যৌন সহবাস -করলে ধর্ষণ করেছে বলে গণ্য হবে।
-১ ইচ্ছার
বিরুদ্ধে ।
২ বিনা সম্মতিতে।
৪ যদি পুরুষ জানে মহিলাটি তার আইনত স্ত্রী না, এবং এমন
ভাব করে যার কারণে মহিলাটি বিশ্বাস করে সে তার আইনত স্ত্রী। (অর্থাৎ যদি কোন নারীর স্বামী এর পরিচয় দিয়ে করে)
৫ সম্মতি-সহ বা
ছাড়া যদি ১৪ বছর এর কম হয়।
***এই ধারায় -একটি ব্যতিক্রম আছে, যদি স্ত্রী এর বয়স ১৩
এর কম হয় স্বামী হলেও তা ধর্ষণ হবে- তবে
১২ বছর এর কম হলে শাস্তি হবে ২ বছর বা অর্থ দন্ড ।
** নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন,
২০০০ এর ধারা ৯ অনুযায়ী যদি ১৬ বছর এর উপর হয় তার সাথে সম্মতি ছাড়া
বা ভয় দেখিয়ে বা প্রতারণা মূলক ভাবে (অর্থাৎ বিয়ের প্রলবন
দেখালেও হবে) সম্মতি আদায় করে তাহলে ধর্ষণ হবে এবং ১৬ বছর এর
কম হলে সম্মতি ছাড়া বা সহ যেভাবেই হোক ধর্ষণ হবে।
ধর্ষণ এর শিকার হলে যা করবেনঃ
আপনি বা আপনার কেহ যদি শিকার হয় তাহলে , আপনি যত দ্রত
সম্বব নিকটস্থ থানায় যাবেন, থানায় গিয়ে পুলিশ কে সব খুলে বলবেন। ফৌজদারী
কার্যবিধি এর ধারা ১৫৪ এজহার এর মাধ্যমে মামলা করে পুলিশ দ্বারা ডাক্তারি পরীক্ষা
করাবেন। মনে রাখবেন, যথা সম্বব গোসল করবেন না যতক্ষণ না
ডাক্তারি পরীক্ষা হয় কারন, এতে আলামত কিছুটা নষ্ট হয়ে যায়।
তবে পুলিশ যদি থানায় মামলা নিতে না চায় তাহলে আপনার জেলা
বা জোন এর এসপি বা ডিসি কে জানাবেন তাতেও কাজ না হলে ফৌজদারী কার্যবিধি এর ধারা ১৯০
অনুযায়ী কোর্টে
ম্যাজিস্ট্রেট এর নিকট নালিশি মামলা করবেন। **মামলা করার
সময় অবশ্যই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ধারা ৯ অনুযায়ী করবেন।
দণ্ডবিধি এর ধারা ১০০ অনুযায়ী আপনি ধর্ষণ করার সময় ধর্ষণ থেকে রক্ষা পেতে ধর্ষণকারীকে খুন পর্যন্ত করতে পারেন।
ধর্ষণ এর শাস্তিঃ
দণ্ড বিধি ৩৭৬ অনুযায়ী যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা ১০ বছর কারাদণ্ড হতে পারে এবং
অর্থ দণ্ড।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ধারা ৯ অনুযায়ী
(১) নারী বা শিশু কে ধর্ষণ করলে যাবজ্জীবন
কারাদণ্ড এবং অর্থ দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
(২) যদি ধর্ষণ এর ফলে মারা যায় তাহলে
মৃত্যদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অনূন্য ১ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড
(৩) যদি
দলগত ভাবে হয় তাহলে প্রত্যেকে মৃত্যদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অনূন্য ১ লক্ষ
টাকা অর্থদণ্ড।
(৪) (ক)
যদি ধর্ষণ করে মৃত বা আহত করার চেষ্টা করে তাহলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অর্থ দণ্ডে
দণ্ডিত হবেন
(খ) ধর্ষণ
এর চেষ্টা করলে অনাধিক ১০ বছর কিন্তু ৫ বছর কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড হতে পারে ।
(৫) পুলিশ
হেফাজতে হলে হেফাজত কারীর অনাধিক ১০ বছর কিন্তু ৫ বছর কারাদণ্ড এবং ১০০০০ টাকা
পর্যন্ত অর্থদণ্ড হতে পারে ।
***আপনি
বা আপনার আশে পাশে যদি কেহ ধর্ষণ এর মত জগন্য অপরাধের শিকার হয়। তারপর আপনার আইনি
পদক্ষেপ না নেওয়াটা অন্য জন ধর্ষণ এর শিকার হওয়ার পথ সুগম করে। যার দায় আপনি এড়াতে পারেন না
ধর্ষিতা
সম্পর্কে নিজের দৃষ্টি ভঙ্গি পরিবর্তন করুণ , যে মেয়ে ধর্ষণ এর মত জগন্য কাজ এর
প্রতিবাদ করে তাকে উৎসাহিত করুণ। কারন সে আগামিকাল আপনার মেয়ে বা বোন বা অন্য মেয়েকে এমন
জগন্য ধর্ষক হতে রক্ষা করেছেন নাহলে, হয়ত এই ধর্ষক আরো ধর্ষণ করত।
Comments
Post a Comment