নির্বাচনী ইশতেহারে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে স্পেশালাইজড স্কুল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব চাই

আমাদের মৌলিক শিক্ষার আতুরঘর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে শুরু থেকে বাস্তবিকভাবেই অনেকটা ছাড় দিতে হয়েছে।

কিন্তু যে সুযোগ সুবিধা আর কর্মপরিবেশ আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দেই তাতে এরচেয়ে যোগ্যতর কেউ এই পেশায় আগ্রহ দেখায় না। আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না। আমাদের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এটাই অনেক যে অরায় শতভাগ শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় আনা গেছে। কিন্তু আমাদের রুপকল্পগূলোর বাস্তবায়ন ও একটা এমার্জিং ইকোনমির নেতৃত্ত্ব এবং তথ্য প্রযুক্তির র্যাডিকাল অগ্রসরতার ডিভিডেন্ড আদায় করতে যে মাত্রার বিজ্ঞানমনষ্ক ও ভালো ইংরেজি জানা লোক দরকার , তা সেই মাত্রায় বাড়ছে না।
দেশে ফি বছর নানা বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। একশোর বেশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, হাজার হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি হয়েছে কিন্তু শিক্ষার মান বা সেইঅর্থে জ্ঞান তৈরি হয় নাই।
শহরের কিছু কিছু সামর্থ্যবান শিক্ষার্থীগণ গণিত অলিম্পিয়াড, ভাষা প্রতিযোগ, সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ ইত্যাদির মত কিছু চমৎকার প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেলেও একেবারে অজপাড়াগায়ের কারো উঠে আসা এখনও অনেক কঠিন।
তাই মান সম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে একটা ধারণা প্রস্তাব করছি। আপাতত পাইলট প্রজেক্ট ভিত্তিতে স্বল্প পরিসরে করতে পারলে, যখন সুফল মিলবে তখন আরো বড় পরিসরে ভাবা যাবে।
প্রকল্পঃ
স্পেশালইজড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
পাঠদানঃ প্রথম- পঞ্চম শ্রেণী।
স্থানঃ
থানা পর্যায় ( প্রত্যেক থানা শহরে একটি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। সেই স্কুলটিকে আপগ্রেড করলে অবকাঠামো খাতে কোনো নতুন খরচ হবে না।)
প্রধান শিক্ষক/ প্রিন্সিপাল ঃ
বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কোনো তরুণ শিক্ষক যিনি দুই-তিন বছরের জন্য ডেপুটেশনে সেবা দিবেন। এতে করে আগ্রহী অনেকেই থাকবে কারণ সারা জীবন তো আর প্রাথমিকে থাকা লাগবে না।
টিচিং স্টাফঃ
সরকারি হাইস্কুলের বিষয়ভিত্তিক স্পেশালাইজড তরুন শিক্ষক। তারাও ২/৩ বছরের জন্য ডেপুটেশনে আসবে। এতে করে নতুনভাবে শিক্ষক নিয়োগের দরকার হবে না। সরকারি ব্যয়ভার বাড়বে না। আমাদের এনসিটিবির ইংরেজি বইয়ের মডেলটি অত্যন্ত ভালো। কমিউনিকেটিভ মেথডে আমাদের ইংরেজি পড়ানোর কথা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো আমাদের শিক্ষার্থী তো দূরের কথা অনেক শিক্ষকও ইংরেজিতে কথা বলতে পারে না। তাই বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক দিয়ে কিছু বাচ্চাকে সেবা দিতে পারলে একটি নতুন প্রজন্ম তৈরি হবে যারা আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে।
টিচিং মেথডঃ

আন্তঃস্পেশালাইজড স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে
হবে।
গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়নের ফলে অনেকের পক্ষে যাতায়াত করে শিক্ষালাভ সম্ভব হতে পারে।
বেল্লাল হোসাইন, আইনজীবী ও সমাজকর্মী
ও
নাজমিন আক্তার, সহকারী জজ,চুয়াডাঙ্গা
(দম্পতি)
Comments
Post a Comment