ধর্ম অবমাননা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত নিয়ে আইন যা বলে।


কোন ধর্মীয় স্থানের ক্ষতি সাধন, অসম্মান করা, লিখিত বা মৌখিকভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা তৈরি, অসম্মান করার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় স্থানে অনধিকার প্রবেশ বা ধর্মীয় বাক্য বা শব্দের বিকৃতি ধর্মীয় অবমাননা বলে গণ্য হবে। ধর্ম অবমাননা যে কোন ধর্মের বিপক্ষেই হতে পারে। সকল ধর্মের মানুষই ধর্ম অবমাননার শিকার হতে পারেন।


ধর্ম অবমাননার শাস্তি:


দণ্ডবিধির ২৯৫ ধারায় বলা হয়েছে, কোন ধর্মীয় স্থান বা সেখানকার কেনা বস্তু ধ্বংস করা, ক্ষতি করা বা অসম্মান করাকে ধর্মীয় অবমাননা হিসাবে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।


২৯৫(ক) ধারায় বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের কোন নাগরিককে মৌখিক, লিখিতভাবে বা অন্য কোন উপায়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হলে তা ধর্মীয় অবমাননা বলে গণ্য হবে।

উক্ত অপরাধের ক্ষেত্রে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।

২৯৬ ধারায় বলা হয়েছে, আইনসঙ্গতভাবে আয়োজিত ধর্মীয় কোন সমাবেশ বা অনুষ্ঠানে কেউ বাধা বা বিশৃঙ্খলার তৈরি করলে সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে। তাহলে এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।


২৯৭ ধারায় বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তির ধর্মানুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় কোন স্থানে অনধিকার প্রবেশ করা, মৃতদেহের অসম্মান অথবা শেষকৃত্যানুষ্ঠানে সমস্যা তৈরি করা হলে সেটাও ধর্মীয় অবমাননা বলে গণ্য হবে।

উক্ত অপরাধের ক্ষেত্রে এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।


ধর্ম অবমাননা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত নিয়ে বিশেষ আইন:

২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৮ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কেউ কোন কিছু প্রকাশ, সম্প্রচার, ওয়েবসাইট বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রচারের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কারো ধর্মীয় বিশ্বাস বা মূল্যবোধে আঘাত করেন, তাহলে সেটা একটা অপরাধ বলে বিবেচিত হবে।

উক্ত অপরাধ করলে অনূর্ধ্ব সাত বছরের কারাদণ্ড এবং অনূর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।

যদি দ্বিতীয়বার একই ধরণের অপরাধ করেন, তাহলে তার অনূর্ধ্ব ১০ বছরের কারাদণ্ড, ২০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।


ধর্ম অবমাননা অথবা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হলে কি করবেন:

ধর্ম অবমাননা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হলে সংক্ষুব্ধ যে কোন ব্যক্তি আইনের আশ্রয় নিতে পারবেন। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি চাইলে থানায় মামলা করতে পারবেন অথবা কোর্টে মামলা করতে পারবেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করে সেটার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।


তবে মনে রাখবেন আইনের আশ্রয় না নিয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে কারো ক্ষতি সাধন করলে উল্টো আপনার বিরুদ্ধে উক্ত ক্ষতিসাধন অনুযায়ী ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সুতরাং আমাদের পরামর্শ হলো যদি কেউ ডিজিটাল মাধ্যমে ধর্মীয় অবমাননা করে তাহলে আপনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর ২৮ ধারা অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।


আপনার যে কোন প্রয়োজনে: ০১৬১৮৯৮৯৭৯৭

Comments

  1. বিদেশি নাগরিক বন্ধু বাংলাদেশের বাংঙালি বন্ধুর কাছে ডলার পাঠাতে পারবে কিনা

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

২৬ এর মামলা কি! কেন মারামরি হলেই ২৬ এর মামলা করতে চাই।

সরকারি চাকরিজীবীদের গ্রেফতার ও সামরিক বরখাস্ত কখন এবং কিভাবে হয়।

পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট কি ও কত ধরনের