সরকারি চাকরিজীবীদের গ্রেফতার ও সামরিক বরখাস্ত কখন এবং কিভাবে হয়।

বর্তমান সময়ে একটি প্রচলিত কথা আছে সরকারি চাকরিজীবীর বিরুদ্ধে মামলা করা বা গ্রেপ্তার করা যাবে না। কোন সরকারি চাকরিজীবীর বিরুদ্ধে থানায় কোন মামলা নিতে চায় না। তবে এটি একটি আইনের ভুল ব্যাখ্যার কারণে থানায় মামলা অনেকেই করতে পারেন না এবং পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনা।


সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪১ (১)  ধারা অনুযায়ী

 ''কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেফতার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।''

অর্থাৎ শুধু তার চাকরি সম্পর্কিত বিষয় কোন অপরাধ হলে গ্রেপ্তার বিষয়ক এই নীতি অনুসরণ করবে। চাকরি দায়িত্ব পালন করার সময় সংঘটিত অপরাধ ছাড়া অন্য কোন ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়।


অন্য ব্যক্তিগত যেকোনো ফৌজদারি অপরাধ (খুন, চুরি, ডাকাতি, মারামারি, নারী নির্যাতন, যৌতুক ইত্যাদি) এর ক্ষেত্রে  সরাসরি তাকে গ্রেফতার করা যাবে কারো কোনো পূর্ব অনুমতি লাগবে না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ সরকারি কর্মচারীকে আইনের অজুহাত দেখিয়ে গ্রেপ্তার করতে চায়না। যদি এমনটি হয় তাহলে আপনি পুলিশকে সরাসরি আইনটি  দেখাতে পারেন।
চাকরি বিষয়ক ব্যতীত অন্য বিষয়ে মামলা এবং গ্রেফতারের ক্ষেত্রে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না।

সাময়িক বরখাস্ত বিভিন্ন কারণে হতে পারে। সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ এর ৩৯ (২) ধারা অনুযায়ী, "কোনো কর্মচারী দেনার দায়ে কারাগারে আটক থাকিলে, অথবা কোনো ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার হইলে বা তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গৃহীত হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ উক্তরূপ আটক, গ্রেফতার বা অভিযোগপত্র গ্রহণের দিন হইতে তাহাকে সাময়িক বরখাস্ত করিতে পারিবে।"
অর্থাৎ তিনটি ক্ষেত্রে যেকোন সরকারি চাকরিজীবী সাময়িক বরখাস্ত হতে পারে। আদালত কোন সরকারি চাকরিজীবী বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করলে সাথে সাথে তা নিয়োগকারী কর্মকর্তার নিকট জানাবে। 
আদালতে যদি কোন মামলা বিচারাধীন থাকে তার সাথে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। একই বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং আদালতে ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে না।

ধারা ৩৯ (৩) অনুযায়ী "কোনো সরকারি কর্মচারী তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ হইতে অব্যাহতি বা খালাসপ্রাপ্ত হইলে, তাহার সাময়িক বরখাস্ত আদেশ, যদি থাকে, প্রত্যাহার করিতে হইবে।"

তবে নিজস্ব আইন থাকায় সাংবিধানিক পদে ও বিচার বিভাগে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ, পোশাকধারী শৃঙ্খলিত যেকোনো বাহিনী, নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী, উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ কয়েকটি খাত এই আইনের আওতায় পড়বে না।

আপনার যে কোনো আইনি সমস্যা জানাতে কল করুন: ০১৬১৮৯৮৯৭৯৭

Comments

Popular posts from this blog

২৬ এর মামলা কি! কেন মারামরি হলেই ২৬ এর মামলা করতে চাই।

পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট কি ও কত ধরনের